বালিয়াটি জমিদার বাড়ি,সাটুরিয়া মানিকগঞ্জ

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় অবস্থিত বালিয়াটি জমিদার বাড়ি সব চেয়ে সুন্দর, আকর্ষণীয় এবং বৃহৎতম একটি জমিদার বাড়ি। মানিকগঞ্জের অনেক গুলো জমিদার বাড়ির মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় এবং দেখতেও অনেক সুন্দর।এটি বর্তমানেবাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ কর্তৃক সংরক্ষিত ও পরিচালিত হয়।


এই জমিদার বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করতে হলে ২০ টাকার টিকিট নিতে লাগে, আর বিদেশিদের জন্য এই টাকার পরিমাণটা হচ্ছে ১০০ টাকা।টিকেট নিয়ে গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেই আপনাকে স্বাগতম জানাবেন বিশাল চারটি প্রাসাদ।চারটি ভবনের মধ্যে তিনটি ভবন ধবধবে সাদা এবং সংস্কার করা,আর একেবারে পূর্বের ভবনটি সেই আগের অবস্থাতেই আছে।

খুব সুন্দর কারুকার্য খচিত এই চারটি ভবনের মধ্যে মাঝখানের দুইটি ভবন দুতলা করে,আর দুই পাশের ভবন দুটি তিন তলা করে।পশ্চিম দিক থেকে দ্বিতীয় ভবনটির দুতলায় রয়েছে একটি জাদুঘর, যেখানে এই জমিদার বাড়িতে ব্যাবহিত বিভিন্ন আসবাবপত্র প্রদর্শন করে রাখা হয়েছে।এইগুলো হচ্ছে এই জমিদার বাড়িতে ব্যাবহার সিন্দুক।পুরো জমিদার বাড়িতে মোট ভবন আছে ৮ টি, তারমধ্যে সামনে আছে ৪টি ভবন আর তার পেছনে আছে আরো চারটি ভবন।

সামনের মাঝের দুটি ভবনের ঠিক পেছনেই আছে দুটাটি অন্দরমহল, বলা হয়ে থাকে সামনের চারটি ভবনে জমিদাররা তাদের ব্যাভসার কাজে ব্যাবহার করতো,আর পেছনের অন্দরমহলে জমিদার পরিবারের সদস্যদের বসবাস করতো।

একদম পশ্চিম দিকের সারিতে রয়েছে আরো দুটি ভবন, ধারণা করা হয় এখানে প্রাসাদের চাকর বাকর, গাড়ি রাখার গ্যারেজ, ঘোড়াশাল ছিল ।

আর একদম পেছনে রয়েছে ছয় ঘাটলা বিশিষ্ট বিশাল এই পুকুর।স্থনীয় একজনের সাথে কথা বলে আমি জানতে পেরেছি,এই জমিদারদের রেখে য়াওয়া এরকম বিশাল ২০ টি পুকুর এখন দেখভাল করে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উচ্চ বিদ্যালয়।জমিদার বাড়িতে থেকে একটু দক্ষিণে অবস্তিত এই স্কুলটি ১৯১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি ওইতিহ্য স্কুল।

“গোবিন্দ রাম সাহা” বালিয়াটি জমিদার পরিবারের গোড়াপত্তন করেন। ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি লবণের বণিক ছিলেন।এটি বাংলাদেশের ১৯ শতকে নির্মিত অন্যতম প্রাসাদ।

জমিদার পরিবারের বিভিন্ন উত্তরাধিকারের মধ্যে “কিশোরীলাল রায় চৌধুরী, রায়বাহাদুর হরেন্দ্র কুমার রায় চৌধুরী তৎকালীন শিক্ষাখাতে উন্নয়নের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। ঢাকার জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কিশোরিলাল রায় চৌধুরীর পিতা. যার নামানুসারে উক্ত প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়।

এই বালিয়াটি জমিদার বাড়ি সবগুলো ভবন একসাথে স্থাপিত হয়নি। এই প্রাসাদের অন্তর্গত বিভিন্ন ভবন জমিদার পরিবারের বিভিন্ন উত্তরাধিকার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে স্থাপিত হয়েছিল। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্লকটি যাদুঘর।

কর্মব্যস্ত একটি সপ্তাহ কাটানোর পর অনেকেই চান বিরতি। ছুটির দিনে কোথাও পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেরিয়ে আসতে পারলে আরো ভালো। কিন্তু শহরের ভিড় আর হট্টগোলের ভেতর বেড়ানোর প্রশান্তিটা আর মেলে কোথায়! শহর ছেড়ে দূরে কোথাও যাবেন সে সময়টাও তো নেই, কারণ ছুটি মাত্র একদিনের!


কীভাবে যাবেন

ঢাকার গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে জনসেবা বা এসবি লিংক গেটলক পরিবহনের বাসে করে মাত্র দুই ঘণ্টায় সাটুরিয়া পৌঁছে যাওয়া যায়। বাসভাড়া পড়বে জনপ্রতি ৭০ টাকা। সাটুরিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে মাত্র ৩০ টাকা রিকশা ভাড়ায় চলে যেতে পারবেন বালিয়াটি জাদুঘর।


টিকেট

বালিয়াটি জাদুঘরের জনপ্রতি টিকেটের দাম দেশি দর্শনার্থীদের জন্য ১০ টাকা এবং বিদেশি দর্শনার্থীদের জন্য ১০০ টাকা। রোববার জাদুঘর পূর্ণদিবস বন্ধ থাকে এবং সোমবার বন্ধ থাকে অর্ধদিবস। সপ্তাহের বাকি দিনগুলোর খোলা থাকে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি নিয়ে আমার তৈরি ভিডিও লিংক:

প্রাচীন নিদর্শন বালিয়াটি জমিদার বাড়ি,মানিকগঞ্জ


No comments:

Post a Comment

পাপের শহর লাস ভেগাস

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা অঙ্গরাজ্যের একটি শহর হচ্ছে লাস ভেগাস। সারা বিশ্বে এটি প্রমোদ নগরী হিসেবে বিখ্যাত। এই শহরকে মনোরঞ্জনের রাজধানীও...