বাঙলা কলেজ,ঢাকা

বাঙলা কলেজ রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী সরকারি কলেজ। বাঙালির জাতীয় জীবনে সর্বস্তরে বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করা এবং বাংলাকে উচ্চতর শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে চালু করার লক্ষ্যে ১৯৬২ সালে এই কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।


বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক আবুল কাশেম। ১৯৬১ সালে তিনি কতিপয় শিক্ষাবিদ ও জ্ঞানীগুণীদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বাঙলা কলেজ স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাকে শিক্ষার মাধ্যম ও অফিস-আদালতের ভাষা হিসাবে চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। 


এ উদ্দেশ্যে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ, ডক্টর ইন্নাস আলীসহ কয়েকজনকে নিয়ে একটি প্রস্ত্ততি কমিটি গঠন করা করেন। ১৯৬১ সালের ১৫ ই ফেব্রুয়ারি ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ঢাকায় একটি বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং এর প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে একটি বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

১৯৬২ সালের ১ অক্টোবর বকশিবাজারের নবকুমার ইনস্টিটিউটে নাইট কলেজ হিসেবে বাঙলা কলেজ কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৬২-৬৩ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে কলা বিভাগ ও বিএ প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।

১৯৬৪ সালে কলেজটি মিরপুরে স্থানান্ত হয়।১৯৬৯ সালের বাঙলা কলেজের বি.এসসি ও বি.কম ক্লাশ শুরু হয়।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বাঙলা কলেজ দখল করে নেয়। তখন দীর্ঘ নয় মাস কলেজটি অবরুদ্ধ ছিল, কলেজের সাইনবোর্ড নামিয়ে এ সময় ‘উর্দু কলেজ’ সাইনবোর্ড লাগানো হয়।


পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় সহযোগীরা বাঙলা কলেজে ক্যাম্প স্থাপন করে অজস্র মুক্তিকামী মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

মূল প্রশাসনিক ভবনের অনেক কক্ষই ছিল নির্যাতন কক্ষ। বর্তমান হলের পাশের নিচু জমিতে আটককৃতদের লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করা হতো। অধ্যক্ষের বাসভবন সংলগ্ন বাগানে আম গাছের মোটা শিকড়ের গোড়ায় মাথা চেপে ধরে জবাই করা হতো। এভাবে মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় জুড়ে বাঙলা কলেজ ও এর আশেপাশে নৃশংস হত্যাকান্ড চলেছে, হয়েছে নারী নির্যাতন।


এ পর্যন্ত বাঙালা কলেজে মোট ১০ টি  বধ্যভূমি চিন্হীহীন করা গেছে। যেখানে পাক হানাদার বাহিনী মুক্তি কামি বাঙালিদের ধরে এনে নির্যাতন ও হত্যা করতো।সেই ১০ টি বধ্যভূমি থেকে বর্তমান কলেজ প্রশাসনের উদ্যোগে তিনটি বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।


১৯৮৫ সালে কলেজটি সরকারিকরণ করা হয় এবং ১৯৯৭ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু করা হয়।

২০১৭ সালে বাঙালা কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৭ কলেজের মধ্যে বাঙলা কলেজ আয়তনে সবচেয়ে বড়। প্রায় ২৫ একক আয়তনের সবুজ এই ক্যাম্পাসে বতামানে ১৮ বিভাগ চালু আছে,যেখানে ৩০ হাজারের বেশি ছাত্র ছাত্রী পড়াশোনা করে।

বাঙালা কলেজে প্রিন্সিপাল আবুল কাশেম এবং শেখ কামাল নামে দুটি হল আছে।এর মধ্যে শেখ কামাল হলটি এখনো নির্মাণাধীন। ছাত্র ছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য আছে বিজয় নামের একটি বাস।

আছে সাকৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য সুবিশাল অডিটোরিয়াম এবং ছাত্রদের পড়াশোনার জন্য আধুনিক লাইব্রেরী।

বাঙলা কলেজে সক্রিয় আছে ২০ বেশি ক্লাব এবং সংগঠন।যারা কলেজের অভ্যান্তরিন  কার্যক্রমের পাশাপাশি জাতির পর্যায়ে কলেজেকে প্রতিনিধিত্ব করে অর্জন করেছে অনেক জাতীয় পুরস্কার এবং সম্মান। বিভিন্ন ক্লাব এবং সংঠনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, বাঙলা কলেজ যুব থিয়েটার,রোভার স্কাউট, বিএনসিসি,বাঁধন, বাঙলা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটি


বাঙলা কলেজ নিয় আমার ইউটিউব ভিডিও লিংক:

সরকারি বাঙলা কলেজ,ঢাক।। মুক্তিযুদ্ধের বধ্যভূমি


৩০০ বছরের পুরনো তেওতা জমিদার বাড়ি

তেওতা জমিদার বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের প্রাচীন একটি জমিদার বাড়ি। এটি উপজেলার তেওতা নামক গ্রামে অবস্থিত।

ইতিহাসবিদদের মতে, সতেরশ' শতকে এই জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এটি নির্মাণ করেছিলেন পঞ্চানন সেন নামক একজন জমিদার। জনশ্রুতি অনুসারে, পঞ্চানন সেন এক সময় খুবই দরিদ্র ছিলেন, তবে একসময় দিনাজপুর অঞ্চলে গিয়ে তিনি তামাক উৎপাদন করে প্রচুর ধনসম্পত্তির মালিক হওয়ার পর এই প্রাসাদ নির্মাণ করেন। পরবর্তিতে এখানে জমিদারি প্রতিষ্ঠিত করে জয়শংকর ও হেমশংকর নামের দুজন ব্যক্তি। ভারত বিভক্তির পর তারা দুজনেই ভারত চলে গেলে বাড়িটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়।

এছাড়াও এখানে রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিচিহ্ন।এ প্রাসাদেই নজরুল, প্রমীলা দেবীর প্রেমে পড়ে লিখেছিলেন,তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়/সেকি মোর অপরাধ

তেওতা জমিদার বাড়িটি মোট ৭.৩৮ একর জমি নিয়ে স্থাপিত। মূল প্রাসাদের চারপাশে রয়েছে আরও বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা ও একটি বড় পুকুর।প্রাসাদের মূল ভবনটি লালদিঘী ভবন নামে পরিচিত। এখানে একটি নটমন্দির রয়েছে। এছাড়াও এখানে রয়েছে নবরত্ন মঠ ও আর বেশ কয়েকটি মঠ। সবগুলো ভবন মিলিয়ে এখানে মোট কক্ষ রয়েছে ৫৫টি।


আপনাকে যেতে হবে মানিকগঞ্জের শিবালয়ের আরিচা ফেরি ঘাটে।ঢাকা থেকে সরাসরি আরিচা যাওয়া যায় পদ্মা লাইন সহ আরো বেশ কিছু বাসে।পদ্মা লাইন ঢাকার গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে আরিচার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়, ভাড়া ১২০ টাকা নিতে পারে। সরাসরি বাস না পেলে পাটুরিয়া গামী যেকোন বাসে উঠে বেওথা নামতে হবে, তারপর বেওথা থেকে রিকশা করে আরিচা যেতে হবে,ভাড়া ২০ টাকা।আর আরিচা থেকে তেওতা জমিদার বাড়ি যাওয়া যাবে অটোরিকশা দিয়ে, ভাড়া নিবে ২০ টাকা।

ষাইট্টা বটগাছ নিয় আমার ইউটিউব ভিডিও লিংক:

৩০০ বছরের পুরনো তেওতা জমিদার বাড়ির ইতিহাস



আরিচা নৌ বন্দর

ভারত-পাকিস্তান বিভাগের আগেই যমুনা নদীর পাড়ে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার এই আরিচা ঘাট দেশের অন্যতম বড় নৌ-বন্দর। কলকাতা-আসাম রুটের জাহাজ-স্টিমার এই ঘাটে ভিড়তো, এখানে ছিল বড় বড় পাটের গুদাম এবং গড়ে উঠেছিল জমজমাট ব্যবসা কেন্দ্র। ১৯৬৪ সালে ঢাকা-আরিচা সড়ক চালু হওয়ার পর আরিচা হয়ে উঠে ঢাকার সাথে উত্তর, পশ্চিম ও দখিন বঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম প্রধান প্রবেশ পথ।


১৯৬৩ সালের ৩১ মার্চ, একটি মাত্র গাড়ি আরিচা ঘাট থেকে নগরবাড়ি পৌঁছে দেবার মাধ্যমে এই বন্দরের যাত্রা শুরু এবং যার ভাড়া ছিল ৭৫ পয়সা।১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু উদ্বোধনের এবং একি সাথে যমুনা নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ার মাধ্যমে আরিচা ঘাটের ব্যস্ততা অনেকখানি কমে যায়। সর্বশেষ ২০০২ বাণিজ্যিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।





ষাইট্টা বটগাছ: ৫০০ বছরের পুরনো ও বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম একটি বটগাছ।

ষাইট্রা ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম।আজ থেকে ৫০০ বছর আগে এই গ্রামে দেবীদাস বংশের পূর্বপুরুষ তাদের জমির ওপর একটি বট ও একটি পাকুড় গাছ রোপণ করেছিলেন। তৎকালীন সময়ে সনাতন ধর্ম বিশ্বাস অনুসারে বটগাছকে মহিলা আর পাকুড়-গাছকে পুরুষ ধরা হত।


সেই সময়ে দাসবংশের পূর্বপুরুষ ঢাকঢোল, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে ধর্মীয়ভাবে বট ও পাকুড় গাছের বিবাহ সম্পন্ন করেন। আর এই কারণেই স্থানীয়রা এই গাছ দুটিকে স্বামী-স্ত্রী বলে অভিহিত করেন।গাছের উপর থেকে বটের  শাখামূল ঝুলে,মাটির সঙ্গে মিশে গিয়ে এমন এক অদ্ভুদ রূপ ধারণ করেছে যেটা বর্ণনা দিয়ে বুঝানো অসম্ভব, যা শুধু স্বচক্ষেই দেখে অনুভব করা যাবে।


এই গাছকে ঘিরে আছে অনেক অলৌকিক ঘটনা।যেমন:

কার্তিক সরকার নামে এক কৃষকের জমিতে বটগাছের ডাল ছড়িয়ে পড়লে তিনি ডালটি কেটে ফেলেন, এরপর  তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ওই বটগাছের নিচে একটি মন্দির নির্মাণ করে সেখানে পূজা-অর্চনা করতে থাকেন, এবং এরপর তিনি সুস্থ হোন। 

এরপর থেকে ভয়ে এলাকার আর কেউ ওই গাছের ডালপালা কাটার সহস পায় না। ফলে গাছ দুটি বর্তমানে অসংখ্য ডালের মাধ্যমে অসংখ্য শিকড় ছেড়ে দিয়ে ৫ বিঘা জমি দখল করে বিশাল আকার ধারণ করেছে।


হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বিশ্বাস করেন এই গাছ দুটি তাদের দেবতা। তাই তারা বটগাছটির নিচে কালীমন্দির নির্মাণ করে সেখানে কালী, সরস্বতী, বুড়ির পূজা এবং দশমী ও বাসন্তী মেলাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে থাকে। নানা অসুখ-বিসুখে মানত করে সুস্থ হয়েছেন এমন সফলতার গল্পও অনেক রয়েছে।

ওইতো দেখা যাচ্ছে বিশাল ষাইট্রা বট গাছ। এই গাছের ডালগুলো চারপাশে এমন ভাবে ছড়িয়ে আছে, ভেতরে গেলে মনে হবে এটি একটি বাড়ি,আর মাথার উপরের ডালগুলো হচ্ছে ছাদ। খুব ঘন ডাল এবং পাতার কারণে সূর্যের আলো এখানে খুব কমই পৌছাতে পারে।


স্থানীয় পরিবেশ খুবই সুন্দর। সত্যিকারের গ্রামীণ পরিবেশ চোখে পড়বে এ গ্রামের আনাচে কানাচে। পিচ ঢালা পাকা রাস্তা, তার দুইপাশে চিরায়ত গ্রাম, ধান-গম-ভুট্টা-আখ প্রভৃতির ক্ষেত, রয়েছে প্রচুর লেবু ও কলার বাগান।

কিভাবে যাবেন:

ষাইট্টা বটগাছ যেতে হলে প্রথমে আসতে হবে ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডে।ঢাকা থেকে ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডে আসতে ভাড়া নিবে ৬০ টাকা। এরপর রাস্তার উত্তর পাশে গিয়ে ধানতার গামি যেকোন গাড়িতে উঠতে হবে।


ঢুলিভিটা থেকে ধানতারা বাজারে আসতে সময় লাগবে ১ঘন্টা,আর ভাড়া হচ্ছে ৩০ টাকা।ধানতারা বাজারের একটু দক্ষিণ দিকে গেলে ষাইট্টা বটগাছ যাওয়ার এই ভ্যানগুলো পাওয়া যাবে।এই ভ্যানে করেই ষাইট্রা বটগাছের কাছাকাছি গিয়ে নামতে হবে।

ষাইট্টা বটগাছ নিয় আমার ইউটিউব ভিডিও লিংক:

ষাইট্টা বটগাছ: ৫০০ বছরের পুরনো ও বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম একটি বটগাছ


'গোলাপ গ্রাম' (Golap Gram): যেন গোলাপের এক স্বর্গ রাজ্য

গ্রামের বুক চিরে চলে গেছে আঁকাবাঁকা সরু পথ। তার দু’পাশে বিস্তীর্ণ গোলাপের বাগান। ফুটে আছে টকটকে লাল গোলাপ। পুরো গ্রামজুড়েই ফুলের সৌরভ। দৃশ্যগুলো দেখার সময় ফুলের বাগানে ঝাঁপিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে! সবমিলিয়ে মুগ্ধ হবার মতো একটি জায়গা।এটি ছিল আমাদের আজকের গন্তব্য গোলাপ গ্রাম এবং তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা।


আমরা এখন আছি সাভার বাসস্ট্যান্ডে। সাভার বাসস্ট্যান্ডের রাস্তার পূর্বে অন্ধ সংস্থা মার্কেট ও চৌরঙ্গী মার্কেটের মাঝে একটি রাস্তা রয়েছে,এই রাস্তা দিয়েই সরাসরি গোলাপ গ্রাম যাওয়া যায়।এখান থেকে গোলাপ গ্রাম যাওয়ার জন্য কয়েক ধরনের গাড়ি পাওয়া যায়,এর মধ্যে একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, এই অটোরিকশা দিয়েই আমার আজকে গোলাপ গ্রাম যাচ্ছি।


ঢাকার কাছে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নে সাদুল্লাপুর গ্রাম অবস্থিত। তুরাগ নদীর তীরের সাদুল্লাপুর গ্রামটিই বর্তমানে গোলাপ গ্রাম হিসাবে পরিচিত। নানা রঙের গোলাপ ফুল দিয়ে ঘেরা পুরো সাদুল্লাহপুর গ্রামটিকে একটি বাগান মনে হয়।সাদুল্লাহপুরকে এখন পর্যটকরা 'গোলাপ গ্রাম' হিসেবেই বেশি চেনেন।

রাস্তা ধরে একটু সামনে হাটলেই চোখে পড়বে অসংখ্য গোলাপ বাগান। আঁকাবাঁকা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় আপনি যখন দেখতে পাবেন আপনার দুপাশে বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে গোলাপের বাগান, যেখানে ফুটে আছে লাল টুকটুকে অগুনিত গোলাপ ফুল,এই দৃশ্য দেখে আপনার মনে হতেই পারে আপনি কোন গোলাপের স্বর্গ রাজ্যে চলে এসেছেন। 

আপনি চাইলে বাগানে ভিতরে গিয়ে বসতে পারেন বা ছবি তুলতে পারেন।তবে বাগানের ভিতরে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে সেই বাগান থেকে ফুল কিনতে হবে,না হলে ভেতরে যেতে পারবেন না, এমনকি অনেক সময় পাশ হেটেও যেতে পারবেন না।


সকালে গোলাপের বাগান গুলোতে কাউকে কোনো কাজ করতে দেখা যায় না। তবে দুপুরের পর প্রতিটি বাগানেই শ্রমিকদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। ফুল কাটা, ফুল বাছাই, ফুল ভেজানো, ফুল বাঁধা সবই কিছু কৃষক শেষ করেন সন্ধ্যার আগে। কারণ সন্ধ্যোর পর পরই বসে মোস্তাপাড়া ও শ্যামপুর ফুল বাজার। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য ব্যবসায়ী এসে ভিড় জমান সেখানে। জমতে থাকে বেচাকেনা। চলে গভীর রাত পর্যন্ত। 

এখানে সাধারণত মিরান্ডা জাতের গোলাপে চাষ বেশী হয়।এখান থেকে চাইলে পছন্দমতো গোলাপ কিনে নিতে পারেন। তবে এরা সাধারণত খুচরা গোলাপ বিক্রি করতে চায় না।এখানকার গোলাপ ফুল ঢাকার তুলনায় অনেক স্বতা। ১০০ শত গোলাপ কিনতে আপনার খরচ হতে পারে ৩-৪ শত টাকা।


এখানে যে শুধু গোলাপ ফুলেই চাষ হয় তা কিন্তু না।গোলাপ গ্রাম হিসাবে পরিচিতি পেলেও সাদুল্লাহপুর গ্রামে জারভারা, গ্লাডিওলাস এবং রজনীগন্ধা সহ আরো কয়েকধরেন ফুলের চাষ হয়। তবে গোলাপ ফুল চাষের তুলনায় অন্য ফুলের চাষ হয় অনেক কম। ঢাকার শাহবাগসহ অন্যান্য ফুলের বাজারের চাহিদা মেটানোর প্রধান যোগানদাতা হচ্ছে সাদুল্লাহপুর গোলাপ গ্রাম। 

কখন আসবেন এখানে,

গোলাপ ফুল দেখার জন্য শীতের সময়টা হচ্ছে এখানে আসার উপযুক্ত সময়।তবে এই এলাকার খোলামেলা এবং নীরব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে আমার মনে হয়েছে গ্রীস্মের সময়ে এখানে আসলে আলাদা একটা সৌন্দর্য দেখা যাবে।


কোথায় খাবেন:

এখানে ভালো মানের কোন রেস্টুরেন্ট‌ আমার চোখে পড়েনি। সবচেয়ে ভালো হয় আসার সময় সাথে খাবার নিয়ে আসলে, আপনি চাইলে যেকোন গাছের ছায়ার নিচে বসে চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে খেতে পারেন, ভালো লাগবে।


কিভাবে যাবেন:

ঢাকা ও তার আশপাশ থেকে যেতে পারবেন অনেক ভাবেই। মিরপুর ১, মিরপুর ১০ কিংবা গাবতলী থেকে রিকশা বা সিএনজি করে দিয়াবাড়ি বটতলা ঘাট আসতে পারবেন। দিয়াবাড়ি ঘাট থেকে শ্যালো ইঞ্জিনের বিভিন্ন নৌকা ১০ মিনিট পরপর সাদুল্লাপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। লোকাল ইঞ্জিন নৌকা ভাড়া জনপ্রতি ২৫ টাকা করে, সময় লাগতে পারে ৩৫-৪০ মিনিটের মতো।


গোলাপ গ্রাম নিয়ে আমার ভিডিও:

গোলাপ গ্রাম (Golap Gram):যেন গোলাপের এক স্বর্গ রাজ্যQRA





পাপের শহর লাস ভেগাস

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা অঙ্গরাজ্যের একটি শহর হচ্ছে লাস ভেগাস। সারা বিশ্বে এটি প্রমোদ নগরী হিসেবে বিখ্যাত। এই শহরকে মনোরঞ্জনের রাজধানীও...